![]() |
শাহিদুল তন্ময় |
রাজধানীর কাফরুলের সেনপাড়ায় ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবিতে একটি বাড়ির সংস্কার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন বনানী থানা ২০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেত্রী রাবেয়া, তার বোন জগেন ওরফে যোগী ও তার ছেলে আপন ও ভাগিনা অপূর্ব ও তাদের লোকজন। এর আগেও এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ এবং জিডি করেও কোনো প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগী ওই বাড়ির মালিক গোলাম কিবরিয়া।
সোমবার (১ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে সেনপাড়া হোল্ডিং নং-৩৭৯/১ প্লটটিতে এই ঘটনা ঘটায় রাবেয়া ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরা।
ওই বাড়ির মালিক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা বলে জানা গেছে, কাফরুলের সেনপাড়ায় ৩৭৯/১ নম্বর বাড়িটির পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি সূত্রে বাড়ির মালিক হন গোলাম কিবরিয়া।
বাড়ির মালিক ভুক্তভোগী গোলাম কিবরিয়া বলেন, বাড়িটি কেনার পর থেকে দুই বোন রাবেয়া ও যোগীর যন্ত্রণায় সদা তটস্থ থাকতে হয়। এর আগেও তাদেরকে চাঁদার টাকা দিতে হয়েছে। গত ২ ফেব্রুয়ারি তারা আমার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।পরবর্তীতে আমি নিরুপায় হয়ে থানায় অভিযোগ ও জিডি করেছি। পরে থানা থেকে রাবেয়া ও যোগীকে আমার প্লটটির সামনে যেতে বারণ করা হয়। কিন্তু ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেত্রী রাবেয়া ও তার বোন, ছোলে-ভাগ্নে মিলে আমার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবিতে চাপ দিচ্ছে। সোমবার বেলা ১১টার দিকে আমি আমার বাড়ির সামনে গেলে রাবেয়া ও যোগীর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা আবার চাঁদা দাবী করে। শেষে নিরুপায় হয়ে তখনই কাফরুল থানায় গিয়ে ওসি সাহেবকে বিষয়টি জানাই। এর কিছুক্ষণ পরই রাবেয়া-যোগীরা আমার ভাড়াটিয়াকে বাড়ি থেকে বের করে বাড়িতে তালা দেওয়ার চেষ্টা করে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রাবেয়া আক্তারের মুঠোফোনে জানান তার বাপদাদা পাকিস্তান আমলে এই জায়গা কাসেম নামের এক লোকের কাছে বিক্রি করেছেন। কাসেম যখন এই জায়গা ত্যাগ করেন তখন এই জায়গার মালিক তার ছোট বোন হয়েছে। দালিলিক কোনো প্রমাণ আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
তিনি আরও বলেন, এ জায়গার মালিক আমি । কিন্তু কিভাবে তা নিজেও জানিনা । তবে অন্যকেউ জায়গার মালিক হলে আমাকে প্রমাণ দেখাক । আমার ক্ষেত্রে প্রমাণের প্রয়োজন নেই। আমার বাপ দাদারা বিক্রি করেছে কাসেম এর কাছে আর এখন যেহুত কাসেম সাহেব নেই । তো মালিক আমি। কাসেম মিয়ার ওয়ারিশ সম্পর্কে জানতে চাইলে। তিনি বলেন, এগুলো আপনাকে বলতে চাই না। সামনা সামনি আসেন অন্য মিডিয়াও আনেন। সবাইকে আমার দেখার বিষয় আছে ।
এ সময় তিনি বলেন, বনানী থানার ওসি কেন আমাকে ফোন দিবে আর সাংবাদিকরাইবা কেনো আমাকে ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করবে, এই সবগুলো বিষয়গুরোও আমার দেখতে হবে। আমাকে ওরা ২০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে চায় আমি নিচ্ছি না। বাড়াটিয়াও বানাতে চেয়ে ছিল আমি হইনি।
এসব বিষয়ে বনানী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন বলেন, রাবেয়া আমার থানার ২০ নং ওয়ার্ড কমিটির সদস্য। বনানী থেকে এত দূরে গিয়ে তার চাঁদাবাজির বিষয়টি দুঃখজনকই নয়, এটা রীতিমতো ধৃষ্টতা। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কাফরুল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুকুল আলম বলেন, গন্ডগোল এর ঘটনা আমি জানার পর টিম পাঠিয়েছি। প্রয়োজন অনুযায়ী৷ দ্রুত ব্যবস্থাও নিচ্ছি।
এর আগে, গত ৩ ফেব্রুয়ারি কাফরুল থানায় একই বিষয়ে একটি অভিযোগ ও সাধারণ ডাইরি করেন জমির মালিক গোলাম কিবরিয়া।