ওয়েব নিউজ |
লিবিয়ায় অনিয়মিত অভিবাসী হিসেবে থাকা আরো ১৪৪ জন বাংলাদেশিকে জাতিসংঘের স্বেচ্ছাপ্রত্যাবাসন কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে৷ ২৯ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা-আইওএম৷
আইওএম-এর লিবিয়া কার্যালয় বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ‘‘আইওএম লিবিয়ার স্বেচ্ছাসেবী মানবিক প্রত্যাবর্তন সহায়তা কর্মসূচির আওতায় ১৪৪ জন বাংলাদেশি অনিয়মিত অভিবাসীকে নিরাপদে বেনগাজি থেকে ঢাকায় ফেরত পাঠানো হয়েছে৷’’
জাতিসংঘের স্বেচ্ছাসেবী প্রত্যাবর্তন কর্মসূচির মাধ্যমে লিবিয়া থেকে অনিয়মিত অভিবাসীদের তাদের নিজ দেশে প্রত্যাসন করানো হচ্ছে৷ কিন্তু, এর মধ্য দিয়ে লিবিয়ায় অবস্থানরত অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা কতটা কমছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা৷
গত সপ্তাহে, আইওএম জানিয়েছে, চলতি বছর নয় হাজার ৩০০ জন অনিয়মিত অভিবাসীকে নিরাপদে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে৷
লিবিয়ার মানবাধিকার পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, অনিয়মিত অভিবাসীদের প্রত্যাবাসনে আইওএম-এর এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়৷ অনিয়মিত অভিবাসন লিবিয়া সরকারের জন্য অন্যতম একটি চ্যালেঞ্জ বলেও মনে করেন তারা৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সুরক্ষা সংস্থা-ফ্রন্টেক্স জানিয়েছে, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত লিবিয়া থেকে মধ্য-ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে অন্তত ৭০ হাজার ৯০৬ বাংলাদেশি ইউরোপে ঢুকেছেন৷
লিবিয়ার ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর হিউম্যান রাইটস (এনওএইচআর)-এর মহাসচিব আবদেল মোনেইম এল-হোর বলেন, অনিয়মিত অভিবাসীদের প্রত্যাবাসনে অর্থায়ন ও অন্যান্য সহায়তা দিয়ে আসছে আইওএম লিবিয়ার স্বেচ্ছাসেবী মানবিক প্রত্যাবর্তন সহায়তা কর্মসূচি৷ এর মাধ্যমে লিবিয়া সরকার অবশ্যই উপকৃত হচ্ছেন৷
কিন্তু আইওএম-এর এই প্রচেষ্টা শুধু ‘‘সরকারি আটককেন্দ্রে আটকেপড়া অনিয়মিত অভিবাসীদের ঘিরে’’ বলেও জানান তিনি৷ তার মতে, এই সংখ্যাটি লিবিয়ায় বসবাসরত মোট অনিয়মিত অভিবাসীদের একটি ক্ষুদ্র অংশ৷
এল-হোর জানিয়েছেন, লিবিয়ায় অনিয়মিত অভিবাসীদের জন্য ২৯টি আটককেন্দ্র রয়েছে৷ এসব কেন্দ্রগুলোতে মোট সাত লাখ অনিয়মিত অভিবাসী রয়েছেন বলে মনে করে আইওএম৷ বাস্তবে এই সংখ্যাটি আরো বেশি বলে মনে করেন তিনি৷
এ বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের জুলাই থেকে সেদিন পর্যন্ত এক হাজার ৩৯০ জন অনিয়মিত বাংলাদেশিকে লিবিয়া থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে৷ দেশে ফিরিয়ে আনা এসব বাংলাদেশিরা লিবিয়ার ত্রিপোলি ও বেনগাজির বিভিন্ন আটককেন্দ্রে ছিলেন৷
সেদিন ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লিবিয়া ফেরত অভিবাসীদের খোঁজখবর নিতে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (কল্যাণ) মোস্তফা জামিল খান৷ লিবিয়াতে তাদের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা প্রতিবেশী ও আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে আলোচনার পরামর্শ দেন তিনি৷ কেউ যেন দালালের খপ্পরে পড়ে অনিয়মিত পথে বিদেশে পা না বাড়ায় সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন করতে লিবিয়া ফেরত বাংলাদেশিদের অনুরোধ জানান মোস্তফা জামিল খান৷
লিবিয়া ফেরত সব বাংলাদেশিকে পকেট মানি হিসেবে কিছু নগদ অর্থ ও খাদ্যসমগ্রী উপহার হিসাবে দিয়ে আসছে আইওএম৷