শাহিদুল তন্ময় |
বাংলাদেশের ক্রিকেটে মাশরাফি বিন মর্তুজা পর কোনো সফল এবং দীর্ঘ মেয়াদি ফাস্ট বোলার হিসেবে মোস্তাফিজ যেটা করেছে সেটা অনন্য নিদর্শন বটে টাইগার ক্রিকেটে। তবে আইপিএলের পর্দায় যে মোস্তাফিজুর রহমানকে দেখলেই বাংলাদেশের মানুষর মন চঞ্চল হয়ে ওঠে, সেই মোস্তাফিজ কোন মোস্তাফিজ?
আইপিএলে মুস্তাফিজের শুরু থেকেই ডেভিড ওয়ার্নার যাঁর সঙ্গে বাংলায় কথা বলে ভাইরাল, মাঠে এলায়িত বসে থাকা যে মোস্তাফিজের সঙ্গে রিকি পন্টিংয়ের হাস্যোজ্জ্বল ছবি নেটে ভাসে, সেই মোস্তাফিজ বাংলাদেশের মোস্তাফিজ তো! একজন বাংলাদেশি হিসেবে পরিসংখ্যানের বিচারের চেয়েও খেলার ইনপেক্টের হিসাবে সবার উঁচুতে ফিজ। আইপিএলের ইতিহাসে প্রথম কোন বিদেশি ক্রিকেটার হিসেবে সেরা উদীয়মান খেলার হওয়া এবং সেখান থেকে নাম কুড়িয়ে আনা কাটার মাস্টার কিনবা ফিজ। সবই তো মোস্তাফিজের আইপিল থেকে পাওয়া।
এখন প্রশ্ন থাকতেই পারে আইপিএলের মোস্তাফিজ কোন মোস্তাফিজ?
প্রশ্ন এই কারণে যে মোস্তাফিজ এখন যতটা না বাংলাদেশের, তার চেয়ে বেশি আইপিএলের। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ম্যাচ খেলেছেন ৪৯টি যেখানে নিজের ঝুলিতে নিয়েছেন ৫১টি উইকেট । সেরা বোলিং স্কোর ৪/২৯ এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে তাঁর নাম যতটা না উচ্চারিত হয়, তার চেয়ে বেশি আলোচিত হয় আইপিএলে খেলেই। বাংলাদেশের ক্রিকেট মোস্তাফিজের ঠিকানা হলেও গন্তব্যের নাম যেন আইপিএল! মোস্তাফিজ নিজে অন্তত মনে মনে সেটাই বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন। আবার সেটাও কিনা তাঁকে কাছ থেকে দেখা মানুষদের ধারণা ।
বাংলাদেশের কোন এক গণমাধ্যম কর্মীও বলেছিলেন, মোস্তা ইজ নেভার কাম ব্যাক। অথচো এই বোলারি দেশের হয়ে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ২১০ ম্যাচ খেলে উইকেট পেয়েছেন ৩০২ টা। টি-২০ তে ৯১ ম্যাচে উইকেট পেয়েছেন ১০৭ টি। সেরা বোলিং যেখানে ৫/২২। অতিরিক্ত প্রত্যাশায় মোস্তাফিজ বাংলাদেশের ক্রিকেট থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাওয়ার পথে, তবে মোস্তাফিজরা হারায় না। নিজেকে ভাঙ্গে এবং গড়ে নতুন ইতিহাস ।
ক্রিকেট ভক্তরা বলছে, আইপিএলের প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে মোস্তাফিজ অনন্য । তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটে সেটা তাকে প্রভাবিত করেন না বলেই প্রথমে তিনি নিজের জাত চেনালেও, এখন মাঠে সেটা অনেকটাই সাদামাটা । শেষ তিন ম্যাচের পরিসংখ্যান তো তাই বলে।