![]() |
ওয়েব নিউজ |
সদ্য চীন সফরে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য, যেগুলো 'সেভেন সিস্টার্স' নামে পরিচিত, সেগুলোকে ‘ল্যান্ড লক’ (স্থলবেষ্টিত) বলে মন্তব্য করেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, এই অঞ্চলের সমুদ্রে প্রবেশের একমাত্র পথ হলো বাংলাদেশ, যাকে তিনি ‘বঙ্গোপসাগরের গার্ডিয়ান’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ড. ইউনূসের এই মন্তব্যের পর ভারতের কূটনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয় এবং অঞ্চলটি ঘিরে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করে মোদি সরকার।
এ প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ঢাকায় আয়োজিত বৈশ্বিক বিনিয়োগ সম্মেলনের পরে, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন ও বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্রিয় হয়ে ওঠে। ভার্চুয়াল মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব বিনিয়োগকারী সম্মেলনে অংশ নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর বলেন, “উত্তর-পূর্ব অঞ্চলটি ‘প্রতিবেশীকে অগ্রাধিকার’, ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ এবং বিমসটেক নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এই অঞ্চলটি আমাদের পাঁচটি প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে স্থলপথে সংযুক্ত এবং ভারত ও আসিয়ানের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল।”
তিনি আরও জানান, এই অঞ্চলকে ঘিরে ভারতের নানা উদ্যোগ চলমান, যা নিকটবর্তী প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে সহায়ক হবে।
ড. ইউনূসের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ভারত কৌশলগতভাবে সজাগ হয়ে ওঠে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি অঞ্চলটিতে অর্থনৈতিক গতিশীলতা আনতে পদক্ষেপ নেয়া শুরু হয়।
তবে ভারতের প্রতিক্রিয়া শুধু অভ্যন্তরীণ পদক্ষেপেই সীমাবদ্ধ ছিল না। ঢাকায় বিনিয়োগ সম্মেলন চলাকালীন ভারত হঠাৎ করে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে দেয়। এর পাল্টা জবাবে বাংলাদেশও কঠোর অবস্থান নেয়। ঢাকা এ সিদ্ধান্তকে ‘সুযোগ’ হিসেবে দেখে ভারতের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর উদ্যোগ নেয়। পাশাপাশি ভারত থেকে সুতাসহ কিছু পণ্যের আমদানি সাময়িকভাবে স্থগিত করে এবং আন্তর্জাতিক ও চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে লজিস্টিক সুবিধা বাড়ানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
ড. ইউনূসের মন্তব্য ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত পরিবেশে এক নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে—যেখানে আঞ্চলিক প্রভাব, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা এখন আরও জটিল সমীকরণের দিকে এগোচ্ছে।