ওয়েব নিউজ |
ফ্রান্সের উত্তরে আঁ নামক একটি ছোট নদী থেকে এক সিরীয় অভিবাসীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নদীটি নর্থ সী বা উত্তর সাগরের প্রবাহে অবস্থিত। ধারণা করা হচ্ছে উক্ত অভিবাসী গত ৩ মার্চ ব্রিটেনে পাড়ি জমা দিতে গিয়ে নিহত ব্যক্তি।
স্থানীয় ডানকের্ক অঞ্চলের প্রসিকিউশন কার্যালয় বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। প্রসিকিউশন জানায়, উত্তর সাগরের আঁ নদী থেকে মঙ্গলবার সকালে পরিচয়পত্রসহ এক সিরীয় অভিবাসীর মৃতদেহ পাওয়া গেছে।
কর্তৃপক্ষের বর্ণনার সাথে চলতি মাসের শুরুতে নিখোঁজ থাকা ২৭ বছর বয়সি এক সিরীয় অভিবাসীর সাথে সাদৃশ্য লক্ষ্য করা গেছে।
মরদেহ উদ্ধারের পর একটি বিচারিক তদন্ত খোলা হয়েছে। তদন্তের উদ্দেশ্য হবে মৃত ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করা। তার মৃত্যুর পরিস্থিতি নির্ধারণ করা।
বিশেষ করে তদন্তে তিনি সাম্প্রতিক উদ্ধার করা অভিবাসীদের সাথে একই নৌকায় তিনি ছিলেন কীনা সেটিও যাচাই করা হবে।
কর্তৃপক্ষের মতে, তদন্তের জন্য ময়নাতদন্তসহ বেশ কয়েকটি প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ করা হবে।
স্থানীয় গ্রঁ ফোর্ট ফিলিপ অঞ্চলের মেয়র সনি ক্লানকার তার এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে লিখেন, ‘‘সিরীয় বংশোদ্ভূত একজন ২৭ বছর বয়সি যুবকের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। জরুরী পরিষেবাকে ধন্যবাদ মৃতদেহ উদ্ধারের জন্য।”
এর আগে গত সপ্তাহে নিখোঁজ এক সিরীয় অভিবাসীর সন্ধানে আদালতে যায় একাধিক ফরাসি অভিবাসন সংস্থা।
সংস্থাগুলোর দাবি অনুসারে, ২০২৪ সালের ৩ মার্চ (রোববার) থেকে নিখোঁজ এই অভিবাসীর নাম জুমা আল হাসান। তিনি সিরিয়ার নাগরিক। ওইদিন শত শত অভিবাসীর সঙ্গে উত্তর ফ্রান্স উপকূল থেকে যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে নৌকায় উঠেছিলেন তিনি।
অভিবাসীরা যাত্রার পর সমুদ্রে বিপদের মুখে পড়লে ঘটনার দিন রাত ১২টায় উত্তর ফ্রান্সের অভিবাসন সংস্থা উটোপিয়া ৫৬ তাদের হটলাইনে ইংরেজিতে লেখা একটি বার্তা পায়। সেখানে লেখা ছিল, “এক জন সমুদ্রে মারা গেছে।”
বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে উটোপিয়া ৫৬ জানায়, ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের উদ্ধারে ফরাসি সেবা অভিযান শুরু করেছিলেন। কিন্তু ২৭ বছর বয়সি সিরীয় জুমা আল হাসান ওই সময় সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে তিনি ছিলেন না।
কর্তৃপক্ষ জানায়, উদ্ধারকারী পুলিশ নৌকাটির কাছে গেলে ওই ব্যক্তি পালানোর চেষ্টা করছিলেন।
এনজিওগুলোর দাবি, জুমার পরিবার সত্যি জানতে চায় তিনি কোথায় আছেন। তার চাচা মোহাম্মদ তাকে খুঁজে পাওয়ার আশায় রয়েছেন। সিরিয়ায় থাকা তার বাবামাকে সন্তানের সংবাদ জানাতে উত্তর ফ্রান্সের কালে অঞ্চলে এসেছেন। জুমার চাচাও থানায় একটি আবেদন জমা দিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার খুঁজে পাওয়া ব্যক্তির সাথে নিখোঁজ অভিবাসীর পরিচয় মিলে গেলে এটি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা দূর হবে বলে মনে করছেন অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা।
চলতি বছরের শুরু থেকে ছোট নৌকায় ব্রিটেনে পৌঁছাতে গিয়ে উত্তর ফ্রান্স উপকূলে ১০ জন অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে।