ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের কাছে সেইন নদীর তীরে অস্থায়ী শিবির তৈরি করে অবস্থান করা ৪০০ জনেরও বেশি অভিবাসীকে সরিয়ে নিয়েছে ফরাসি প্রশাসন। প্রেফেকচুরের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে অভিবাসন সংস্থা ও এনজিওগুলো।
প্যারিসের পুলিশ সদর দপ্তর বুধবার জানায়, সেইন নদীর পানির উচ্চতা সর্বোচ্চ চার মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধির সম্ভাবনায় বন্যার ঝুঁকি তৈরি হওয়ায় একটি ডিক্রি জারি করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৃহত্তর প্যারিস অঞ্চলে আবাসন সমস্যায় থাকা অনিয়মিত অভিবাসীদের সহায়তা করে অভিবাসন সংস্থা ইতুপিয়া৫৬। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের পর সংস্থাটি জানায়, “পুলিশ সদর দপ্তর সেইন নদীর তীরে থাকা সকল শিবির উচ্ছেদের আদেশ জারি করেছে। এটির ফলে ৪০০ অভিবাসীকে আবারো রাস্তায় যেতে হবে। প্রশাসন মূলত প্রাক-অলিম্পিক অভিযান শুরু হয়েছে।”
প্রেফেকচুরের গৃহীত ডিক্রিটি বুধবার জারির বেশ আগেই শনিবার সন্ধ্যা থেকে সেইন নদীর পানির স্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে প্যারিসের বেশ কিছু এলাকায় বন্যার পূর্বাভাস দেয় আবহাওয়া অধিদপ্তর।
যদিও বৃহস্পাতিবার থেকে পানির স্তর আবার স্বাভাবিক হয়ে আসার কথা রয়েছে।
অভিবাসীদের উচ্ছেদে প্যারিস প্রেফেকচুর প্রকাশিত ডিক্রিতে বলা হয়, “কর্তৃপক্ষের অনুমান অনুসারে পঁ-মারি এবং অস্তেরলিটজ স্টেশনের মধ্যে অবস্থিত নদীর তীরের অস্থায়ী শিবিরগুলিতে ৪২০ জন অভিবাসী অনিয়মিতভাবে অবস্থান করছেন।”
প্রায় ৮০টি ফরাসি এবং কানাডিয়ান সংস্থা, এনজিও, সমিতি এবং অধিকার সংগঠন নিয়ে গঠিত প্লাটফর্ম ‘লো রেভে দ্য লা মেদায়’ এসব অভিবাসীদের জন্য বিকল্প আশ্রয়ের পরিকল্পনা না করার প্রশাসনের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে।
বেশ কয়েক মাস ধরে সংস্থাগুলো অলিম্পিককে কেন্দ্র করে বৃহত্তর প্যারিস অঞ্চলে চলমান সামাজিক পরিচ্ছন্নতার নিন্দা করে আসছে।
তাদের মতে, ২০২৪ সালের অলিম্পিক গেমসকে সামনে রেখে রাস্তায় বসবাসকারী এবং সবচেয়ে অনিশ্চিত অবস্থায় থাকা একটি জনগোষ্ঠীকে ধীরে ধীরে উচ্ছেদ করা হচ্ছে৷
তবে এই ব্যবস্থার যুক্তি হিসেবে ফরাসি কর্তৃপক্ষ যুক্তি দিয়েছে, আবাসন সমস্যায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য ইল-দ্য-ফ্রঁন্স অঞ্চলে জরুরী ব্যবস্থার অংশ হিসাবে বিভিন্ন কাঠামো মিলিয়ে প্রতি রাতে এক লাখ ২০ হাজার লোকের অস্থায়ী থাকার সুযোগ করে দেয়া হয়।