ওয়েব নিউজ |
স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ থেকে ১২৪ জন অভিবাবসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেছেন দেশটির উপকূলরক্ষীরা৷ বৃহস্পতিবার সাগরে ভাসতে থাকা দুটি কাঠের নৌকা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়৷ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মধ্যে একটি ছোট্ট শিশুও ছিল৷
স্পেনের রেড ক্রস জানিয়েছে, প্রথমে ৬৬ জনকে নিয়ে আসা একটি কাঠের নৌকাকে গ্রান ক্যানারিয়া থেকে ১০ নটিক্যাল মাইল দক্ষিণে দেখতে পায় উপকূলরক্ষীরা৷ দ্বিতীয় নৌকাটিও আশপাশেই ছিল৷ ওই নৌকায় দুই নারীসহ ৫৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন৷
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্স বলছে, সম্প্রতি অনিয়মিত অভিবাসনের জন্য ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের আটলান্টিক মহাসাগরীয় রুটটি খুবই ব্যস্ত হয়ে উঠেছে৷ পশ্চিম আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে যারা ভাগ্য বদলের আশায় ইউরোপীয় ইউনিয়নে আসতে চান, তারাই বেছে নিচ্ছেন ঝুঁকিপূর্ণ এই রুটটি৷
স্পেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে বিপজ্জনক এই পথ পাড়ি দিয়ে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ৩৯৩৷ গত বছর একই সময়ে এই সংখ্যাটি ছিল মাত্র দুই হাজার ১৭৮৷
স্প্যানিশ এই দ্বীপপুঞ্জটি থেকে আফ্রিকার পশ্চিমে সবচেয়ে নিটকতম উপকূলের দূরত্ব মাত্র ১০০ মাইল বা ১৬০ কিলোমিটার৷ বৃহস্পতিবার অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধারের পর গ্রান ক্যানারিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷
গেল বছরে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে ইতিহাসের সর্বোচ্চ অভিবাসনপ্রত্যাশীর আগমনসহ স্পেনে অনিয়মিত পথে আসা অভিবাসীর সংখ্যা ৮০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছিল৷ ৩ জানুয়ারি দেশটির সরকার এ তথ্য জানিয়েছে৷
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উপচে পড়া ভিড়ে ভেঙে পড়েছিল ক্যানারির আশ্রয়ব্যবস্থা৷ এসব কারণে অভিবাসন ইস্যুটি গেল বছর স্পেনের রাজনৈতিক অঙ্গনের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছিল৷ গ্রিস ও ইটালির সঙ্গে ইউরোপে উন্নত জীবনের খোঁজে আসা অভিবাসীদের কাছে স্পেনও হয়ে উঠেছে অন্যতম প্রবেশপথ৷
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালে মোট ৫৬ হাজার ৮৫২ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী অনিয়মিত পথে স্পেনে আসেন৷ ২০২২ সালের তুলনায় যা ৮২ দশমিক ১ শতাংশ বেশি৷ ২০১৮ সালের পর, এবারই প্রথম দেশটিতে এতো বেশিসংখ্যক অভিবাসী এসেছেন৷ ওই বছর ৬৪ হাজার ২৯৮ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী অনিয়মিত পথে স্পেনে এসেছিলেন৷
গেল বছর আসা অভিবাসীদের ৩৯ হাজার ৯১০ জন আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আটলান্টিক মহাসাগারের বিপজ্জনক অভিবাসন রুট পাড়ি দিয়ে ক্যানারিতে এসেছেন৷ ২০২২ সালের তুলনায় সংখ্যাটি ১৫৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি৷
ভূমধ্যসাগরে কড়াকড়ি নিয়ন্ত্রণ আরোপের কারণে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের দারিদ্র্য এবং সংঘাত থেকে পালিয়ে আসা মানুষের কাছে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ ইউরোপের প্রবেশের অন্যতম প্রবেশপথ হয়ে উঠেছে৷
আফ্রিকান অভিবাসীদের নিয়ে আসা নৌকাগুলো সাধারণত কাঠের তৈরি এবং লম্বা ধরনের হয়৷ সাধারণত এসব নৌকা নিয়ে আফ্রিকার মৎস্যজীবীরা সাগরে মাছ ধরতে যান৷ নৌকাগুলো সাধারণত পিরোগ নামে পরিচিত৷ এসব নৌকাগুলো মরক্কো মৌরিতানিয়া, গাম্বিয়া এবং সেনেগাল থেকে ছেড়ে আসে৷