উত্তর ফ্রান্স থেকে ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইংল্যান্ডে পৌঁছাতে গিয়ে রোববার সাত বছর বয়সি একটি শিশু মারা গেছে। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছে দুই অভিবাসী।
রোববার (৩ মার্চ) উত্তর ফ্রান্সের ভাতেন উপকূলে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। ফরাসি প্রসিকিউশন জানিয়েছে, নৌকাটিতে সাত থেকে ১৩ বছর বয়সি শিশুসহ মোট ১৬ জন অভিবাসী ছিলেন। একজন নিহত এবং দুইজন নিখোঁজ ছাড়া বাকিদের জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
চ্যানেল ও উত্তর ফ্রান্স সংশ্লিষ্ট ফরাসি প্রেফেকচুর জানিয়েছে, “নৌকাটিতে উঠা অভিবাসীদের নেয়ার মতো জায়গা ছিল না। যাত্রার কিছুক্ষণ পর উপকূল থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে নৌকাটি ডুবে গিয়েছিল।”
আরও পড়ুন: বুলগেরিয়া সীমান্তে পুশব্যাক নিয়ে ‘অবগত’ ফ্রন্টেক্স
ডানকের্ক অঞ্চলের পাবলিক প্রসিকিউটর অফিস বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছে, “জীবিত উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বেশ কিছু লোককে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিবাসী মৃত্যুতে পরোক্ষ ভূমিকা এবং বেআইনি প্রবেশ ও অবস্থানে সহায়তা এবং মানবপাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ তদন্ত করা হবে।
উপকূল থেকে এত দূরে নৌকাডুবির ঘটনার পর ধারণা করা হচ্ছে, অভিবাসীরা এখন ফরাসি পুলিশের নজরদারি এড়াতে আরও গভীর অভ্যন্তরীণ পথ হয়ে সৈকতের দিকে তাদের পথ তৈরির চেষ্টা করছে।
সৈকতের পাশে থাকা একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “পুলিশ এবং উদ্ধারকর্মীদের দ্রুত ঘটনাস্থলের দিকে ছুটে যেতে দেখা গিয়েছিল।”
প্রসিকিউশন জানায়, “জরুরি পরিষেবার দ্রুত হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও ছোট মেয়েটি নিউমোনিয়া ও শ্বাসজনিত কারণে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে।”
প্রেফেকচুর জানিয়েছে, “নিহত মেয়েটির বাবা-মা তাদের অন্য তিন সন্তানকে নিয়ে নৌকায় উঠেছিলেন। বাকিদের ডানকের্ক হাসপাতাল কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। নৌকাটি সম্ভবত চুরি করা হয়েছিল। সেখানে অন্য একটি দম্পতি এবং আরো ছয়টি শিশু ছিলেন।”
জীবিত উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে মোট ১০ জনকে হাসপাতালে এবং দুই পুরুষ অভিবাসী ও তিন শিশুকে ভাতেন এলাকার পৌর হলের একটি রুমে স্বাগত জানানো হয়েছিল।
ডানকার্ক পাবলিক প্রসিকিউটর অফিস এ ঘটনায় চালু হওয়া ফৌজদারি তদন্তের দায়িত্ব ডানকের্ক-হয়মিল জেন্ডারমেরি রিসার্চ ব্রিগেড এবং অনিয়মিত অভিবাসন রোধের দায়িত্বে থাকা ফরাসি কার্যালয় (অল্টিম) এর কাছে ন্যস্ত করেছে।
উত্তর ফ্রান্সে সক্রিয়া অভিবাসন সংস্থা ইতুপিয়া৫৬ তাদের এক্স সাবেক (টুইটার) অ্যাকাউন্টে জানিয়েছে, “আমাদের সীমান্ত নীতিগুলো আবারো অভিবাসীদের হত্যা করেছে। ক্রোধের কারণে আমাদের মত প্রকাশ করতেও কষ্ট হচ্ছে।”
এ নিয়ে চলতি বছরে চায়নেল পাড়ি দিয়ে গিয়ে মারা যাওয়া অভিবাসীর সংখ্যা তিনজন-এ দাড়াল।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালে চ্যানেল পাড়ি দিয়ে গিয়ে ২৯ হাজার ৪৩৭ জন অভিবাসী অনিয়মিত উপায়ে ব্রিটেনে পৌঁছেছিল। ২০২২ সালে এ সংখ্যাটি ছিল ৪৫ হাজার ৭৭৪ জন।