ওয়েব নিউজ |
ইসরায়েলের আক্রমণের ফলে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে অবরুদ্ধ গাজাবাসী। বেশি কষ্টে আছেন নারী ও শিশুরা। গাজার হাসপতালগুলোর ওয়ার্ড ভরে গেছে ক্ষুধার্ত শিশুদের দিয়ে। খবর রয়টার্সের।
এমনি এক শিশু ছয় বছর বয়সী ফাদি আল-জান্ত। সে চরম অপুষ্টিতে ভুগছে। চামড়ার নিচ থেকে তার পাঁজর বেরিয়ে এসেছে। চোখ কোটরে ডুবে গেছে। উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে বিছানায় শুয়ে অসহায় তাকিয়ে আছে সে। এখানে দুর্ভিক্ষ নেমে আসছে।
ফাদির দুটো পা কাঁটা। সে আর হাঁটতে পারছে না। যুদ্ধের আগে ফাদিকে ছবিতে হাস্যোজ্জ্বল, স্বাস্থ্যকর চেহারার শিশু হিসেবেই দেখা গেছে। নীল ডেনিম পরা ফাদির মাথায় ঘন চুল। ছোট ভিডিও ক্লিপ তাকে একটি ছোট মেয়ের সঙ্গে কোনো এক বিয়ের অনুষ্ঠানে নাচতে দেখা গেছে।
তার মা শিমা আল-জান্তের মতে, ফাদি বর্তমানে সিস্টিক ফাইব্রোসিসে ভুগছে। যুদ্ধের আগে তাকে যে ওষুধ খাওয়ানো হতো এখন তার তা পাওয়া যাচ্ছে না। অবরুদ্ধ গাজায় পুষ্টিকর কোনো খাবার তার ভাগ্যে জুটে না।
রয়টার্সের প্রাপ্ত একটি ভিডিওতে ফাদির মা বলেন, ‘তার অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। সে দুর্বল হয়ে পড়ছে। সে কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। সে আর দাঁড়াতে পারে না। আমি যখন তাকে দাঁড়াতে সাহায্য করি, সে সরাসরি পড়ে যায়।’
হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলের স্থল ও বিমান অভিযানের পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় খাদ্য, ওষুধ ও বিশুদ্ধ পানির ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে বলে ডাক্তার ও সাহায্য সংস্থাগুলো জানিয়েছে।
ফাদির মতো এমন আরও ২৭ শিশুর চিকিৎসা করেছে কমল আদওয়ান হাসপাতালটি। সবাই সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অপুষ্টি ও পানিশূন্যতার কারণে মারা গেছে বলে হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে।
মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, অন্যরা উত্তরে গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালে এবং দক্ষিণতম শহর রাফাতে মারা গেছে। জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা বলেছে, ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি ইসরায়েলের আক্রমণ থেকে আশ্রয় চেয়েছে।
রয়টার্স গত সপ্তাহে রাফাহের আল-আওদা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একটি পরিদর্শনের সময় ১০ শিশুকে দেখেছিল যারা মারত্মক অপুষ্টিতে আক্রান্ত। তবে মন্ত্রণালয়ের রিপোর্ট করা মৃত্যুর সংখ্যা যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
বিশ্বের ক্ষুধা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশনের (আইপিসি) একটি পর্যালোচনায় বলেছে, উত্তর গাজায় এখন থেকে মে মাসের মধ্যে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। এখানে ৩ লাখ মানুষ আটকা পড়েছে।